ভারতে বাংলাদেশি ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
ভারতের গুজরাটে এম এস বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মোহনা মন্ডলের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ২০ বছর বয়সী মোহনা ভদোদরার রাওপুরা এলাকার নর্মদা অ্যাপার্টমেন্টে একা থাকতেন, সেখানেই তার লাশ পাওয়া যায়।
সুইসাইড নোট ও পুলিশের বক্তব্য
পুলিশ জানিয়েছে, মোহনার ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে, যেখানে তিনি নিজের সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করলেও কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ তোলেননি। তবে মৃত্যুর কারণ সুস্পষ্ট নয়, বিষয়টি তদন্তাধীন।
রাওপুরা পুলিশ থানার কর্মকর্তা কুলদীপ সিং যাদব বলেছেন,
"মোহনার সহপাঠীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও তারা তেমন কোনো তথ্য দিতে পারেনি। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তিনি পড়াশোনার চাপের মধ্যে ছিলেন। তবে আমরা বিস্তারিত তদন্ত করছি।"
পরীক্ষার দিন অনুপস্থিত ছিলেন মোহনা
গত বছর বাংলাদেশ থেকে এম এস বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন মোহনা। মঙ্গলবার তার প্রথম বর্ষের প্রথম পরীক্ষা ছিল, কিন্তু তিনি পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিলেন। সহপাঠীরা পরীক্ষা শেষে মোহনাকে ফোন করলেও কোনো সাড়া মেলেনি।
মোহনার পরিবারের সদস্যরাও তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হন। পরে বাংলাদেশ থেকে তার পরিবার সহপাঠীদের ফোন দেয়। সন্দেহ হলে, সহপাঠীরা রাতেই মোহনাকে দেখতে যান। দরজায় নক করেও কোনো উত্তর না পেয়ে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের পদক্ষেপ
রাওপুরা পুলিশের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাংলাদেশে মোহনাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।
সহকারী পুলিশ কমিশনার অশোক রাতাভা বলেন,
"আমরা ঘটনাস্থল থেকে সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছি এবং তদন্ত শুরু হয়েছে। মোহনাকে শ্বাসরোধে মৃত্যু হয়েছে বলে পোস্টমর্টেম রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে, যা সম্ভবত ঝুলে থাকার কারণে হয়েছে।"
সহপাঠীদের মতামত
মোহনার এক বাংলাদেশি সহপাঠী জানান,
"তিনি দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় ৯০% নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হন এবং গত বছরের সেপ্টেম্বরে এম এস বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। প্রথমে হোস্টেলে থাকলেও পরে একা থাকতে শুরু করেন।"
তিনি আরও বলেন,
"মোহনা পড়াশোনা নিয়ে মানসিক চাপে ছিলেন। পরীক্ষায় ভালো করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন।"
পরবর্তী পদক্ষেপ
পুলিশ বলছে, আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মোহনার লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। পুরো ঘটনার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
বিভাগ: আন্তর্জাতিক